দেশের উদীয়মান অর্থনৈতিক ধারাকে আরও সমৃদ্ধশালী ও টেকসই করতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করা বর্তমান সময়ের অন্যতম প্রধান দাবী। আর দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ও শিল্পায়নের জন্য জ্বালানি শক্তির প্রধান উৎসই হচ্ছে প্রাকৃতিক গ্যাস। এছাড়াও দেশে উৎপাদিত রাসায়নিক সারের কাঁচামাল, যানবাহনের বিকল্প জ্বালানি, বাণিজ্যিক ও শহরাঞ্চলের গৃহস্থালীর কাজে প্রধান জ্বালানি হিসেবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহার হচ্ছে। অন্যান্য জ্বালানি অপেক্ষা প্রাকৃতিক গ্যাসের মূল্য কম হওয়ায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই গ্যাস বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে আসছে। শিল্পসমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে একসময় খুলনা খ্যাতি লাভ করলেও গ্যাসের সরবরাহ না থাকায় প্রত্যাশা অনুযায়ী বিকশিত হতে পারেনি। উপরন্তু জ্বালানি স্বল্পতা ও উৎপাদন ব্যয় বেশী হওয়ার ফলে শিল্পোন্নয়নের সম্ভাবনা প্রায় রুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর এই সমস্যার কার্যকরী সমাধানে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার দূরদর্শী ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে দেশের সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে খুলনা তথা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বিভিন্ন শ্রেণির গ্রাহককে গ্যাস সরবরাহের উদ্দেশ্যে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানির অগ্রযাত্রা সূচিত হয়। ২৩ নভেম্বর ২০০৯ সালে খুলনাস্থ Registrar of Joint Stock Companies & Firms এ নিবন্ধিত হওয়ার মাধ্যমে সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (এসজিসিএল) পেট্রোবাংলার অধীন একটি সরকারি মালিকানাধীন স্বতন্ত্র কোম্পানি হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে। খুলনা বিভাগ, বরিশাল বিভাগ ও বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা এ কোম্পানির অধিভুক্ত এলাকা। অধিভুক্ত এলাকায় বিতরণ গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ, গ্রাহকদের গ্যাস সংযোগ প্রদান এবং সংযোগ পরবর্তী সেবা প্রদানের দায়িত্ব এ কোম্পানির।
কার্যাবলি (Functions)
১. গ্যাস আইন ২০১০, গ্যাস বিপণন নিয়মাবলী ২০১৪, এসজিসিএল পরিচালনা পর্ষদ, পেট্রোবাংলা, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত প্রজ্ঞাপন/পরিপত্র/ অফিস আদেশ মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ, বিপণন ও রাজস্ব আদায় করা;
২. এসজিসিএল এর আওতাভুক্ত এলাকায় প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের লক্ষ্যে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করা;
৩. এসজিসিএল আওতাভুক্ত এলাকায় গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন স্থাপন/প্রতিস্থাপন/উন্নয়নকরণ (Upgradation):
৪. এসজিসিএল আওতাভুক্ত এলাকায় ডিআরএস/টিবিএস/সিএমএসস্থাপন/মেরামতকরণ/ মডিফিকেশন/ আপগ্রেডেশন;
৫. গ্রাহকদের অসাধু কার্যক্রম রোধ ও গ্যাস চুরি রোধকল্পে ভিজিল্যান্স কার্যক্রম জোরদার করা;
৬. মানসম্মত গ্রাহক সেবা নিশ্চিতকরণ, গ্যাস ব্যবহারে সতর্কতা ও করণীয় সংক্রান্ত জনবিজ্ঞপ্তি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকমিডিয়ায় প্রচার করা এবং
৭. গ্যাসের অপচয় রোধ ও তাপীয় দক্ষতা বৃদ্ধিকল্পে গ্রাহক আঙ্গিনায় জ্বালানি সাশ্রয়ী গ্যাস সরঞ্জাম ব্যবহারের জন্য গ্রাহককে উদ্বুদ্ধকরণ এবং ইভিসিযুক্ত মিটার স্থাপনের সরকারি প্রজ্ঞাপন/গাইডলাইন অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে সকল প্রাহক প্রান্তে ইভিসিযুক্ত মিটার স্থাপন।